মুভি রিভিউ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মুভি রিভিউ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
 টনি মুভি রিভিউঃ  সিরিয়াল কিলার রহস্য এবং ভাগ্যের পরিহাস
মুম্বাই শহরে বাড়তে শুরু করলো খুন। নিজ বাসা বাড়িতেই খুন হয়ে যাচ্ছে একের পর এক। কোথাও বা খুন হচ্ছে বুড়ো বুড়ি কোথাও বা জ্বালিয়ে দিচ্ছে প্রেমিক প্রেমিকাকে। হন্যে হয়ে পুলিশ নামলো তদন্তে। শহরের মোড়ে মোড়ে বসানো হলও নিরাপত্তা বেষ্টনী।  

এমনি একটি চেক পোস্টে তিন ঘণ্টা চিরুনি তল্লাশি চালিয়েও একটা মাতাল পর্যন্ত ধরতে পারলো না টহল-রত পুলিশ। ধৈর্যের বাঁধ ভাংতে লাগলো ইন্সপেক্টর সামির তার সহযোগী সাব ইন্সপেক্টর বিলাসের। কি ব্যাপার শহরের লোকজন কি মদ খাওয়াও ছেড়ে দিয়েছে নাকি? অথচ তাদের বাপ দাদারা একটা সময় সিআইডির হাবিলদার হয়েও ঘুষের টাকায় বাড়ি গাড়ি করে ফেলেছিলেন। আর তারা মশা মাছিও ধরতে পারছেনা। 



এমনই হাঁসি ঠাট্টার সময় চেক পোস্টে আগমন ঘটে এক আগুন্তুকের। বাইকের কাগজ পত্র আগুন্তুকের এর সময় পরিচয় জানতে চাইলে জানালো সে কলেজ ছাত্র। সব ঠিক ঠাক থাকায় ছেড়েই দিচ্ছিল তাকে। কিন্তু তার চোখে মুখের চোরা চোরা রহস্য জনক ভাব চোখে পড়ে গেল সাব ইন্সপেক্টর বিলাসের। আর ঠিক তখনই তার পকেট থেকে বেরিয়ে আসে দামি মাউজার পিস্তল।


পকেটে আড়াইশ রুপি রাখার সামর্থহীন কলেজ ছাত্রের কাছে আড়াইশ লক্ষ টাকার অস্ত্র! ভাবতেই দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেল ইন্সপেক্টর সামিরের মনে। যাক এতক্ষণে বুঝি একটা শিকার পাওয়া গেল! 


তাৎক্ষনিক জিজ্ঞাসাবাদ আর একটু কোশল খাটাতেই সে বলে বসলো শহরে ঘটা সিরিয়াল কিলিং গুলো সম্পর্কে তার কাছে তথ্য আছে। কিন্তু সে নির্দোশ তবে সহজে মুখ খুলতেও নারাজ। ইন্সপেক্টর সামির তখনি ফন্দি এটে নিল এ শিকার বড় কিছু হবেই হবে। 


ধীরে ধীরে স্বীকারোক্তি দিতে শুরু করলো কলেজ ছাত্র আশিস। অদ্ভুত এক গল্প শোনালো সে। আর সেটি তদন্তে নেমেই হিমশিম খেয়ে গেল সাব ইন্সপেক্টর বিলাস। 


আশিসের জবানবন্দি মতে, অনাথ আশ্রমে বড় হওয়া আশিস সাইকোলজির স্টুডেন্ট। থিসিস পেপারের জন্য এক সিরিয়াল কিলারের মনস্তাতবিক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিন সহপাঠী সহ সেও জড়িয়ে পড়লো খুনের সাথে। 

এইদিকে আটঘাট বেধে তদন্তে নামা বিলাস আশিসের কথার সত্যতা খুঁজতে ছুটে বেড়ায় অনাথ আশ্রম থেকে চার্চে। সেই চার্চের ফাদারের আপন ছোট ভাই-ই নাকি সেই সিরিয়াল কিলার। 


মজার ব্যাপার হচ্ছে তদন্ত করতে গিয়ে এক পর্যায়ে বিলাস জানতে পারে ফাদারের ছোট ভাই অল্প বয়সেই মারা গেছে। তবে কি আশিস মিথ্যা গল্প সাজাচ্ছে? একই সাথে আশ্রমে খোঁজ নিতে গেলে সেখানের টিচার বিলাশকে থাপ্পড় মেরে বসে। 


কী প্রশ্ন জাগছে মনে? কেনই বা থাপ্পড় মারলো বিকাশকে আর আশিস নির্দোশ হলে তার কথাই বা মিলছেনা কেন? নাকি সে নিজেই কোন গল্প বানাচ্ছে একের পর এক? কিন্তু সহজ সরল অশিস এত বড় গল্প বানাবে এটাও মানতে পারছে না বিলাশ। 


এই দিকে বিলাশ টের পায় তার বস সামির গোবেচারা আশিসের মত শিকার পেয়ে খালি হাতে ছাড়ার পাত্র নয়। তাহলে কি ফন্দি আটছে সে নিরীহ আশিসকে নিয়ে? আর তার বাকি তিন সহপাঠীর কপালে এই নির্মম পরিহাস কেন? আর সেই সিরিয়াল কিলারের কাহিনীটাই বা কি?



এমনই সব রহস্যের জট বিলাসের সাথে সাথে আপনার খুলতে পারবেন টনি মুভিটির একদম শেষে। আর তার জন্য এক নিঃশ্বাসে দেখে ফেলতে হবে ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া অসাধারণ এই মুভিটি।


উত্তেজনাপূর্ণ  মুহুর্ত আর কাহিনীর ঘোর পেচে আটকে থাকবেন মুভিটির পুরো ২ ঘন্টা চার মিনিট। নিসন্দেহে মুভিটি থ্রিলার মুভি প্রেমীদের কাছে অনবদ্য হয়ে থাকবে। সে জন্যেই হয়তো IMDB রেটিং অনুসারে মুভিটি পেয়েছে ১০ এর মধ্যে ৮। 


মজার ব্যাপার হচ্ছে মুভির কলা কোশলি সবাই প্রায় নতুন বললেই চলে। অভিনয়ের বিচারে কাউকে দেখে একদমই বিশ্বাস হয়না তারা অভিনয়ে কাঁচা। বরং তাদের নিখুঁত অভিনয়ের জন্য বেশ আলোচিত হয়েছেন মিড়িয়া গুলোতে। 


পাশাপাশি মুভির গল্পটাও বেশ জমজমাট। রহস্য আর তার জটিলতা গুলো সত্যিই আসাধারণ। বিশেষ করে শেষের দিকের রহস্যটা জানার পরে আমার মত আপনারো মাথা ঘুরে যাবে এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেয়া যায়। 


এই প্রসঙ্গেই মুভি পরিচালক একই সাথে লেখক Vipul K. Rawal বলেছেন তিনি মুভিটিতে কোন রগ রগে যৌন সুড়সুড়ি দেওয়ার বিষয় রাখেননি। সেই সাথে মুভিটিতে নেই কোন গানও। তবুও পুরোটি সময় চরম এক উত্তেজনা নিয়েই শেষ করবেন মুভিটি।

যারা লক ডাউনে বসে ইউটিউবের আগাগোড়া দেখে শেষ করে ফেলেছেন। তারা অবশ্যই দেরি না করে মুভিটি দেখতে বসে যেতে পারেন এখনই। 

 

৬০০ শব্দের এই লেখাটি লিখতে আমার যা যা ঘাটতে হয়েছে (তথ্যসূত্র)-


১। https://www.imdb.com/title/tt8017136/

২।https://timesofindia.indiatimes.com/entertainment/hindi/movie-reviews/tony/movie-review/72274112.cms

৩। https://in.bookmyshow.com/mumbai/movies/tony/ET00117872


পরিণীতা- ভালবাসা এবং প্রতিশোধ

Parineeta Movie Review by imtiazshoykat.blogspot.com

পরিণীতা- ভালবাসা এবং প্রতিশোধ


আমি বরাবরই ভাল ভাল মুভি গুলো সবার শেষে দেখি। কেননা যখনই যেটার হাইপ উঠে সেটা নিয়ে লাগাতার পোস্ট চলতেই থাকে।

যেটা ভাল সেটা ভাল বলতে বলতে ফেনা তুলে ফেলে। আর একবার পচানি খাইলে সেটার তো কথাই নাই। ফেসবুকে মুভি গ্রুপ গুলাতে সেটা কচলানো লেবুর মত তিতা হয়ে ঝুলতে থাকে। 



সেই অভ্যাস বসত গত বছরের পরিণীতা মুভিটি সার্ভারে আপলোড করা হয়েছি দেখেছি কিন্তু দেখার আগ্রহ বোধ করিনি।



ফ্রেন্ড লিস্টের দু একজন জোর ও করেছিল দেখার কিন্তু ঠিক ঠাক মুডটা পাচ্ছিলাম না। অই দুই তিনবার ট্রেইলার দেখেই ক্ষ্যান্ত দিয়েছি।

কিন্তু শেষ মেশ হুট করেই দেখতে বসে গেলাম। আর দেখার পর ভাল লাগাটা নিয়ে মুভি শেষ করেই রিভিউ লিখতে বসে গেলাম। 


পরিণীতা মুভিতে যা দেখবেন

দুরন্তপনা কিশোরী বয়স আর বাড়ির পাশে ক্রাশ খাওয়া হুম টিউটার থাকলে যা হয় অই আরকি। এই নিয়েই ছিমছাম গল্পের পরিণীতা মুভিটি।


তবে মুভিটি ঠিক প্রেম কাহিনী নিয়ে নয়। এর ভেতরের মজাটা পাবনে মুভির একদম শেষের টুইস্টে। মুভির ঠিক মাঝ বরাবর আসতেই নায়ক "বাবাই দা" বলা নেই কওয়া নেই গলায় দড়ি লাগিয়ে ঝুলে পড়লো। মানে সুইসাইড আরকি।


তবে আমি যতটা সহজ ভাবে বলে ফেললাম সুইসাইড এর পেছনের কারণটাও কিন্তু এতটা সহজ ছিল না।


বাবাই-দা কে হারিয়ে কিশোরী মেহুল যেন এক লাফে অনেক বড় হয়ে যায়। এক দিকে সংসার অন্যদিকে হারানো প্রেমের শোক। অবশেষে সংসারের ঘানী টানতে মেহুলকে পা বাড়াতে হয় কর্পোরেট জগতের গ্লামারাস লাইফে। সেখানে ক্যারিয়ার সামনে এগিয়ে নিতে হলে বসের ছোঁয়া লাগেই। এখানেই বেড়া ছেড়া লাগিয়ে দেয় মেহুল। 


তবে কি মেহুল বাবাই-দার কথা একদমই ভুলে যাবে? তবে কি এই প্রেম মিথ্যে ছিল? আর বাবাই-দা-ই বা কেন শুধু শুধু আত্মহত্যা করে বসলো মুভির ঠিক মাঝ বরাবর?   


ছিম ছাম গল্পের এই সুইসাইডের রহস্যটা মুভির ঠিক শেষে বেরিয়ে আসবে। আর তখনি আলি বাবার চিচিং ফাঁক ( যা ভাবছেন তা নয় ) এর মত সব জল পানি হয়ে যাবে আপনার কাছে!  


তার জন্যে পুরো এক ঢোকে মুভিটি গিলে ফেলত হবে আপনাকে। ভুলেও কিন্তু উঠা যাবে না মুভি পজ করে। সেই সাথে প্রতিটি দৃশ্যে মেহুলের পাগলামিটা অবশ্যই উপভোগ করবেন আপনি। 


কেন দেখবেন পরিণীতা মুভিটি? 

একটা কলেজ পড়ুয়া দুরন্তপনার কিশোরী মেয়ের ঠিক যতটুকু দুষ্টুমি আর ছন্ন ছাড়া হওয়া উচিত শুভ শ্রী যেন ঠিক ততটাই ছিল মুভিতে। মুভিটি দেখা শেষে আপনি একপ্রকার বাধ্যই হবেন এটা মানতে যে শুভ শ্রীর এটা একটা বেস্ট মুভি ছিল। চরিত্রের সাথে এর আগে এতটা মিশে যেতে খুব একটা চোখে পড়ে নি তাকে। 

Image Source: Indulge Express


আর ঋত্বিক চক্রবর্তী ব্যাপারে কিছু বলার নেই। এই লোকটার প্যাশনেট অভিনয় যে কাউকেই মুগ্ধ করতে বাধ্য। তার কাজই তাকে চেনাতে বাধ্য করেছে। কিছুদিন আগে দেখা তার অভিনীত ভিঞ্চি দা সিনেমাতে তার ভিলেন চরিত্র ভুলার মত নয়। এছাড়াও তার কাজ করা প্রতিটি সিনেমাতে তার চরিত্র গুলো বেশ প্রশংসার দাবিদার। ২০১৩ সালে অপুর পাঁচালী সহ ব্যোমকেশ পর্ব এবং হর হর ব্যোমকেশেও অভিনয় করেছিলেন তিনি। 

Image Source: zee5



এছাড়াও মুভিটিতে রয়েছে মোট ৭ টি গান। যার মধ্যে শ্রেয়া ঘোষালের তোমাকে এবং অর্কের সেই তুমি গান দুটি এই মুভি হেটার্সদেরও ভাল লাগবে। 



যাইহোক, ঘরে বসে থেকে আর এই রিভিউ পড়ে দু একবার ভেবে চিন্তে সময় নষ্ট করার আগেই দেখে ফেলতে পারেন মুভিটি। একবার মেহুল চরিত্রে ডুব দিতে পারলে পুরো মুভির ১ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট খুব একটা খারাপ কাটবে না। 


২০১৯ সালে মুক্তি প্রাপ্ত রোমান্টিক ধাঁচের মুভিটি পরিচালনা করেন রাজ চক্রবর্তী। আর পরিণীতার গল্পটি লিখেছেন অর্ণব ভৌমিক। তার আরও একটি ক্রাইম থ্রিলার “প্রতিদ্বন্দ্বী”আসছে ২০২১ সালে।  


IMDB অনুসারে মুভির রেটিং ৭.৩।  ব্যক্তিগত পছন্দ অনুসারে ৭.৫ বা আরেকটু  আবেগ বসে ৮ দিয়ে দেওয়া যায়। তবে যারা দেখে ফেলেছেন তারা ব্যক্তিগত রেটিং জানাতে পারেন। 




Image Source: zee5
সরকার ২০১৮ মুভি রিভিউ - পলিটিক্স এবং মার্কেটিং

সরকার ২০১৮ মুভি রিভিউ

Sarkar Movie Review Poster by imtiazshoykat.blogspot.com


আপনি জানেন প্রতিদিন কত টাকা কেজি দরে টমেটো বিক্রি হয়? না ই জানতে পারেন সেটাই স্বাভাবিক। তবে বিশ্ব জুড়ে টমেটোর বা সসের চাহিদা কতটা সেটা তো জানেন! কে জানে হয়ত এই মুহূর্তেও আপনি টমেটো সস দিয়ে আয়েশ করে কিছু খাচ্ছেন! কিন্তু দুঃখ জনক বিষয় এই যে তামিল নাড়ু সহ পৃথিবীর অনেক দরিদ্র দেশের কৃষকগণ তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে আত্মহত্যা করছে প্রতিদিন। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার হিসেব মতে প্রতি বছর গড়ে ১২,০০০ কৃষক আত্মহত্যা করে। [i]

যাইহোক টমেটো কিংবা কৃষক নিয়ে নয় বরং তামিল নাড়ুর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়েই ২০১৮ নির্মিত হয়েছিল সরকার মুভিটি।

মুভিটির প্রধান এবং নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন স্টাইলিশ হিরো Joseph Vijay আর নায়িকা হিসেবে পাবেন Keerthy Suresh কে।

কাহিনী সংক্ষেপে

আশা করি এতক্ষণে বুঝে গেছেন যে সরকার মুভিটি একটি রাজনৈতিক একশন ধরনের সিনেমা। কাহিনী সংক্ষেপে বলতে গেলে নায়ক Sundar Ramasamy (Vijay) একটি সুনাম ধন্য প্রতিষ্ঠানের CEO যার নাম শুনলেই ভয়ে অস্থির হয়ে যায়। কেননা সে যখন প্রতিযোগী কোন কোম্পানিকে টার্গেট করে তখন সে কোম্পানির "লাল বাত্তি" জ্বালিয়েই ছাড়ে।


নির্বাচন উপলক্ষে সে ভারতে এসে ভোট দিতে গিয়ে দেখে তার ভোট অন্য কেউ দিয়ে ফেলেছে! আর যায় কোথায়! নায়কের ভোট অন্য কেউ দিবে তাও এরকম এক বাঘা কোম্পানির CEO হওয়া সত্ত্বেও! শুরু হয় ভোটের আইনি লড়াই সেই সাথে জন সাধারণের ভোটাধিকার নিয়ে আন্দোলন আর শেষ মেশ জন-দরদী নেতা কোম্পানির CEO পদ ছেড়ে যোগ দেন রাজনীতিতে।

মুভির যে জিনিস গুলো খারাপ লেগেছে-


১। মুভির শুরুতেই নায়কের শো-অফের কারণে কিছুটা না বরং অনেকটাই বিরক্ত হতে পারেন। আমার কাছেই বিরক্ত লেগেছিল।

২। শুরুর দিকের কাহিনী আর ক্যারেক্টার বিল্ডিং কিছুটা ধীর গতির মনে হয়েছিল।

৩। একতরফা নায়ক নির্ভর মুভি। ভাল নায়িকা থাকলেও তেমন কোন বিশেষ ভূমিকায় খুব একটা দেখা যায়নি।


যে জিনিস গুলো ভাল লেগেছে

১। শুরুতে কিছুটা ধীরগতির হলেও অর্ধেকের পরেই কাহিনী দ্রুত মোড় নিতে থাকে।

২। শেষের দিকে বেশ ভাল কয়েকটি টুইস্ট আছে যে গুলো নিঃসন্দেহে উপভোগ করার মত।

৩। মুভিটির VGM আর একশনের দৃশ্য গুলো চমকপ্রদ। বিশেষ করে স্লো মোশন গুলো যথাযথই ছিল সেই সাথে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক গুলোও ঠিকঠাক ছিল।




২ ঘণ্টা ৪৩ মিনিটের মুভিটিতে মোট ৫টি গান ব্যবহার করা হয়েছে। যার মধ্যে দুটি আলাদা গানে A. R. Rahman এবং Mohit Chauhan এর মত শিল্পীদের কাজ রয়েছে । আলাদা করে বলার কিছু নেই তবে বিশেষ করে Omg Ponnu গানটিতে Keerthy Suresh এর নাচের প্রশংসা করতেই হবে।





IMDB অনুসারে ১১,৯২০ জনের রেটিং পেয়ে মুভিটির অবস্থান ৬.৮। মুভিটিতে আহামরি কিছু নেই যার জন্য আপনার দেখতেই হবে! কারণ USA তেই রিলিজের পরে মুভিটি ২.৫ কোটি রুপি ক্ষয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়। [ii]

তবে মার্কেটিং অথবা রাজনৈতিক ইনফ্লুয়েন্সের কিছু ব্যাপার সেপার বুঝতে হলে দেখতে পারেন মুভিটি। জন সাধারণকে উজ্জীবিত বা একত্রিত করার বিষয় গুলো বেশ ভাল লেগেছিল। মুভির শেষের দিকের কিছু রাজনৈতিক মার প্যাঁচের খেলায় মুভিটিকে অসাধারণ কিছু না মনে হলেও আফসোস করতে হয় নি খুব একটা।



তথ্যসূত্রঃ-


[i] https://timesofindia.indiatimes.com/india/over-12000-farmer-suiciআসদাসদdes-per-year-centre-tells-supreme-court/articleshow/58486441.cms

[ii] https://www.filmibeat.com/tamil/news/2018/sarkar-total-collection-report-verdict-tamil-nadu-usa-kerala-karnataka-andhra-and-more-279378.html


লুকা মুভি রিভিউঃ রোমান্স আর থ্রিলারের অদ্ভুত সংমিশ্রণ


গল্পের প্লট

লুকা গল্পের নায়ক যে কিনা একজন শিল্পী। ছবি আকা তার নেশা। সব সৃজনশীল মানুষদের মধ্যেই বোধহয় কিছুটা ফোভিয়া টাইপের পাগলামি কাজ করে। সেই সুবাধে লুকার মধ্যেও একটা নয় কয়েকটা ফোভিয়া ছিল। অল্প বয়সে বাবা মারা যাওয়ায় মানসিক যন্ত্রণা সেই সাথে একমাত্র আপন মা কেউ হারিয়ে মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল লুকা। ঠিক তখনি ভবঘুরে Sivan এসে লুকাকে তার জগতের ভেতরটাকে দেখতে শিখায় আর রঙ তুলির আঁচড়ে ভেতরের রূপটাকে ছবির ক্যানভাসে এঁকে ফেলতে পারে লুকা।
Luca Movie Review by imtiazshoykat.blogspot,com

Luca Movie Review by imtiazshoykat.blogspot,com



কোথায় লুকা মুভিটি ডাউনলোড করবেন?  

২০১৯ এর মুভি হলেও লুকা মুভিটির হিন্দি ডাব YouTube এ এখনো পাবেন না। সেই সাথে অরিজিনাল মুভিটিউ ইউটিউবে নেই। যার কারণে বাধ্য হয়েই আপনার মুভিটি ডাউনলোড করে দেখতে হবে। যার জন্যে আপনার নেট প্রভাইডারের সার্ভারে খুঁজে দেখতে পারেন আছে কিনা। না থাকলে

লুকা মুভির সাবটাইটেল? 

মালায়লাম ভাষা না জানলেও মুভিটি দেখতে আপনার তেমন কোন অসুবিধা হবে না। কারণ এর ইংরেজি বা বাংলা সাবটাইটেল দুটোই রয়েছে। চমৎকার ভাবে অনুবাদকৃত ইংরেজী সাবটাইটেল দিয়ে উপভোগ করতে পারেন লুকা সিনেমাটি। তবে আপনি চাইলে

শেষ কথা

শেষ দৃশ্যে নিহা আর লুকাকে আপনি অবশ্যই এক সাথে ভিজতে দেখে ঘাবড়ে যাবেন না। কারণ কথা ছিল বেঁচে থাকলে পরের বর্ষায় এক সাথে ভিজবে দুজন! কে জানে? মুভিতে লুকা আর নীহারিকার সেই সখ পূরণ না হলেও পরিচালক

মারদানি ২ মুভি রিভিউঃ যে মুভি কিশোর সিরিয়াল কিলিং এর গল্প বলে



Mardaani 2 Movie Review by imtiazshoykat.blogspot.com

মারদানি ২ মুভি রিভিউ

ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য মতে ২০০০ এর উপরে রেপ-মার্ডার কেস গুলো ঘটে ১৮ বছরের কম বয়সী কিশোরদের হাতে। আর এগুলো মাত্র রিপোর্টেড কেসের সংখ্যা এর বাইরের গুলা তো বাদই। এ রকমই ইন্ডিয়ায় সাম্প্রতিক কালে ঘটে যাওয়া কিছু রেপ মার্ডার কেস নিয়ে নির্মিত মুভি মারদানি ২।

Yash Raj Films ব্যানারে হাজার খানেক মুভি আছে যে গুলো অল-টাইম ফেবারেট লিস্টে থাকবে। তার মধ্যে, ধুম, দিল ওয়ালে দুল হানিয়া লে জায়েঙ্গে, সুলতান, মহব্বাতেন, লেডিস vs রিকি ভাল, চাক দে ইন্ডিয়া, ভির যারা, ফানা, সালাম নামাস্তে সবারই কম বেশি এক বারের উপরে দেখা হয়েছে আশা করি। কি নেই তাদের? রোমান্টিক মেলোড্রামা কমেডি থেকে শুরু করে একশন থ্রিলার সবই আছে।



Mardaani 2 Movie Scean

তবে রোমান্টিক আর একশন থ্রিলারের জন্যে Yash Raj Films খ্যাত হলেও সিরিয়াল কিলিং বা এই ধরনের টুইস্টিং মুভি Yash Raj Films ব্যানারে খুব একটা চোখে পড়ে নি। তবে রানী মুখার্জির মারদানি ২ এই ঘাটতিটা পূরণ করেছে বলে মনে হচ্ছে। যারা এর মধ্যেই দেখে ফেলেছেন তারা বলতে পারবেন।

কাহিনী


Mardaani 2 Movie Poster


কিন্তু শিভানি শিভাজি রায় যে কিনা তার ব্যাচের মধ্যে সেরা। কারণ তার কাছে কনস্টেবলের বউসের জন্ডিস থেকে শুরু করে কোন মাফিয়ার কোন কনসাইনমেন্ট কাস্টমসে আটকে আছে সব খবরই থাকে। আর তার মত চৌকশ পুলিশ অফিসার থাকতে কেস সমাধান হবে না এটা তো সম্ভব নয়। কিন্তু সিরিয়াল কিলার ধরা কি এতই সোজা?

রাগের মাথায় যখন কেউ অপরাধ করে বসে তাকে ধরা খুব সহজ। কিন্তু ঠাণ্ডা মাথার খুনি ধরা তেমন একটা সহজ নয়। কেননা বাচ বিচার করে পরিস্থিতি মেপেই চলে খুনি। এ মুভিতেই দেখতে পাবেন খুনি কতটা নাকের নিচে থাকে পুলিশের!

মুভির কাহিনী খুব সাজানো গুছানো। অনেকটা রোমাঞ্চকর কাহিনীর জন্যেও মুভিটি দেখা উচিত।



Mardaani 2 Movie Scean

২০১৯ সালে দীপাবলি উৎসবে রিলিজ পায় মারদানি ২।

IMDB তে ৫,৬৯৭ ভোট পেয়েমুভিটির রেটিং ৭.৪

পুরো ভারত বর্ষ জুড়ে ২০১৬ সালেই ৩৮,৯৭৪ টি রেপ কেস লিপিবদ্ধ করা হয়! ভাবা যায়? সেই সাথে ররেছে নারীদের অত্যাচারের আরো কত মামলা। নারীবাদী কথা অনেকে বললেও এক সাথে সবাই এগিয়ে না আসলে এই সমাধান কখনো সম্ভব নয়। আর সে কারণের নারীদের এক সাথে এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র নিয়েই বানানো হয়েছিল এই মুভিটি।


Mardaani 2 Movie Poster

সময় করে মুভিটি দেখে এসে ব্যক্তিগত রেটিংটি কমেন্টে জানিয়ে উৎসাহ দেওয়ার জন্য অনুরোধ রইল।

ডোংরি কা রাজা

সিনেমা রিভিউঃ ডোংরি কা রাজা 


"তুমি বেঁচে থাকলেই আমাদের ভালোবাসা বেঁচে থাকবে। মরে গেলে সবই কাহিনী হয়ে যায়। আর আমাদের ভালোবাসা সকল কাহিনীর ঊর্ধ্বে ঠিক ইতিহাসের মত! আর যখনই আমাদের কথা কারো মনে পড়বে আর ভাববে যে এক যে ছিল রাজা সে তার রানী শ্রুতি কে অনেক ভালোবাসতো!" 

নাহ, এই সিনেমাটি এতটাও ড্যাবডেবে প্রেমের গল্প দিয়ে ভরা নয়। তবে লাইন গুলো পড়ে এরকম মনে হলেও আসলে তা নয়। এটি একদমই শেষের দিকে উপলব্ধি করার মত কিছু লাইন। যেটি দেখার পরেই বুঝতে পারবেন


সনি টিভির আদালতের কল্যাণে কেডি পাঠককে আমার ৩/৪ বয়সী খালাতো ভাইও চিনে। আসলে যে তার নাম রণিত রায় সেটাও ঠিক মত অনেকে জানেনা। 

তবে এই লোকটা টিভি সিরিয়াল করতে করতে অভিনয়ে এতটা পাকা হয়ে গেছে সেটা তার বিগত কয়েকটা সিনেমাতেই টের পাওয়া যায়। তার পাকা পোক্ত অভিনয়ের মত এরকমই একটি অসম্ভব ক্ষমতাধর চরিত্রে অভিনয় করে ডোংরি কা রাজা নামের এই সিনেমাটিতে। 

২০০৬ সালে প্রকাশিত সিনেমাটি অনেকটাই সাদা মাটা লাগলেও এর গল্পটা খুব একটা সাদা মাটা নয়। 


এত কিছু বলার পরে কাহিনী আর সংক্ষেপ করলাম নাহ। হাতে সময় থাকলে নিজেই দেখে আসুন।  


IMDB তে এই সিনেমটির রেটিং মাত্র ৩.৯। মানে IMDB র আরো একটি আন্ডাররেটেড মুভি। যার কারণেই এই লেখাটি লেখা। তাই অবশ্যই দেখে এসে কমেন্টে জানাবেন গল্পটি কেমন লেগেছিল।

ব্যক্তিগত রেটিং- ৭.৫/১০ 
মুভিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। 
“কাঠবিড়ালী” প্রাণী নয়, একটি সিনেমার নাম!
[ছবিঃ নেট থেকে নেওয়া] 
কাঠবিড়ালী খুবই সাধারণ এবং নিরীহ প্রাণীর নাম। কিন্তু সাধারণ মানুষ এর উপকারের চাইতে অনিষ্টটাই বেশি দেখে। ডোরা কাটা দেখতে সুন্দর দেখতে পালতে ইচ্ছা করলেও গ্রামের মানুষ একে একদমই দেখতেই পারে না। কারণ এটি ফল মূল খেয়ে গ্রামের মানুষদের অপকারই বেশি করে।

এমনই একটি নিরীহ মানুষরূপী কাঠবিড়ালীর গল্প নিয়েই কাঠবিড়ালী সিনেমাটি। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন নিয়ামুল হাসান মুক্তা এবং অসাধারণ এই গল্পটিও তার লেখা। 'চিলেকোঠা ফিল্মস' এর প্রযোজনায় মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রটি বেশ আলোড়ন তুলেছেন সাধারণ দর্শক শ্রেণীর কাছে। একই সাথে প্রথম সিনেমা হিসেবে বেশ আলোচিত ও সমালোচিত হচ্ছেন পরিচালক নিজেও।

খুবই সাদা মাটা গ্রাম্য চরিত্র নির্ভর সিনেমা কাঠবিড়ালী। কিন্তু অসাধারণ এর গল্পটা। মূল চরিত্র হাসু (আসাদুজ্জামান আবীর) এবং কাজল (অর্চিতা স্পর্শিয়া)। শুরুতেই রহস্যজনক খুনের সিন দিয়ে শুরু হলেও ধীরে ধীরে এর মূল গল্পের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। গ্রামের পরোপকারী নায়ক হাসু। যার আত্মীয় স্বজন কেউ না থাকায় গ্রামের সবাইকেই তার পরিবারের মতই আপন করে নেয়। সেই সাথে আপন করে নেয় গ্রামের কিশোরী চরিত্রের কাজলকে। একমাত্র বন্ধু আনিসকে (সাইদ জামান শাওন) নিয়ে গল্পের কাহিনী আগাতে থাকে। সেই সাথে যুক্ত হয় গ্রামীণ প্রেম ভালোবাসা, পারিবারিক কলহ এবং ধীরে ধীরে মোড় নিতে থাকে মূল ঘটনার দিকে। 


সিনেমার প্রতিটি চরিত্রের নিখুঁত অভিনয় সিনেমাটির বিশেষ বিশিষ্ট। গ্রাম্য জীবনের সুখ হাসি কান্না এবং জৈবিক লোভ লালসা খুব সূক্ষ্ম ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন পরিচালক নিয়ামুল হাসান মক্তা। পুরো সিনেমাটি শেষ করে অবাক হবেন যে এটিই পরিচালকের প্রথম সিনেমা।

পুরো সিনেমাটির গল্প, চরিত্র, সিনেমাটোগ্রাফি, গান এবং আবহ সংগীত বেশ ভালো ভাবেই সমাদৃত হয়েছে। দর্শক, মিডিয়া, কলাকুশলীদের কাছেও আলোচিত হয়েছে সিনেমাটি। একই সাথে সেন্সর বোর্ডের প্রশংসা পত্র পায় সিনেমাটি।



যে ৩টি কারণে মুভিটি আপনার বিশেষ ভালো লাগবেঃ

১। ট্রেইলার দেখে সিনেমাটিকে সাদা মাটা প্রেম কাহিনী ভেবে বসলে একদমই ভুল করবেন। সিনেমাটিতে প্রেম কাহিনীর পাশাপাশি রয়েছে রহস্য ও রোমাঞ্চকর উত্তেজনা।

২। খুবই সাদা মাটা গ্রাম্য পরিবেশটা এমন ভাবে ফটে উঠেছে মুভিটিতে সেটি গ্রাম প্রিয় যে কারোই ভালো লাগবে। বিশেষ করে ভিডিওগ্রাফি এবং ড্রোন থেকে নেওয়া প্রতিটি সিন অসাধারণ ছিল।

৩। সিনেমার শুরুতেই খুনের রহস্যের কুল কিনারা করতে এক নাগাড়ে শেষ করতে হবে আপনাকে।
[ছবিঃ নেট থেকে নেওয়া] 

যে ৫টি কারণে সিনেমাটি আপনার খারাপ লাগতে পারেঃ

১। নায়ক নায়িকার অবাধ প্রেম আর পাট ক্ষেতে যাওয়া দেখে কিছুটা হাস্যকর লাগতে পারে। তবে পরিচালক পাটক্ষেত যে ভাবেই উপস্থাপন করতে পেরেছেন সেটি দেখার মত।

২। অর্চিতা স্পর্শিয়া কোন দিক থেকেই গ্রাম্য মেয়ের সাথে যায় না। কিন্তু পুরো সিনেমাটিতে তার অভিনয় প্রশংসাযোগ্য।

৩। নায়ক নায়িকার প্রেম পিরিতি দেখে ভাবতেই পারেন তাদের গ্রামে আর কোন মানুষজন নেই। :p

৪। সিনেমার মাঝখানে নায়ক নায়িকার কোন বাঁধা ছাড়া হুট করে বিয়ে হয়ে যাওয়া আপনি নাও মানতে পারেন। 

৫। পরিচালকের প্রথম সিনেমা বলে সিনেমাটি ভালো হয়নি বলেও ধারণা করতে পারেন।

২০১৬ সালের সিনেমাটির কাহিনীর কাজ শুরু হলেও শুটিং শেষ করতে পরিচালকের লেগেছিল পাক্কা বছর। কারণ এর প্রতিটি দৃশ্যপট এবং বর্ষা এবং শীতের টাইমল্যাপস গুলো আলাদা আলাদা সিজনে ধারণ করা হয়। কৃত্রিম এবং ক্যামেরার কারসাজি খুবই কম ব্যবহার করার ফলে গ্রাম বাংলার নিজস্ব বইশিষ্ট খুবই নান্দনিক ভাবে ফুটে উঠেছে সিনেমাটিতে। এছাড়াও সিনেমাটির অর্থায়ন নিয়েও কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হয় পরিচালক। কিন্তু পুরো সিনেমাটি কলাকুশলী মিলেই সিনেমাটি বানিয়ে ফেলেন আর তার জন্য সে সময়ে নেন নি কোন পারিশ্রমিক।

২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর চলচ্চিত্রটির উদ্বোধনী হলেও, ২০২০ সালের ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের ১৮ টি প্রেক্ষাগৃহে পুনরায় মুক্তি পায় সিনেমাটি। ব্যবসায় সফল এই মুভিটির পরিবেশনায় ছিল জাজ মাল্টিমিডিয়া

অসাধারণ উত্তেজনাপূর্ণ কাহিনীর এই সিনেমাটি আপনাকে বেশ ভালো একটা ধাক্কা দিতে সক্ষম হবে। ড্রামা জনরার সিনেমা হলেও এর থ্রিলার মিস্ট্রির জন্য আপনাকে মুভিটি দেখতেই হবে।


IMDB অনুসারে কাঠবিড়ালীর রেটিং- ৮.২


ব্যক্তিগত রেটিং- ৯.৫
মুভি রিভিউঃ সাঞ্জু (Sanju 2018)

মুভি রিভিউঃ সাঞ্জু (Sanju 2018)


imtiazshoykat.blogspot.com 

সঞ্জয় দত্ত! ভারতীয় অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম ক্ষমতাধর অভিনেতা তিনি। তবে তার ক্ষমতা শুধু অভিনয়ে সীমাবদ্ধ নয়, আন্ডার ওয়ার্ল্ড পর্যন্ত বিস্তৃত। ব্যক্তিগত জীবন আর অভিনয় জগতে বহুল আলোচিত এই অভিনেতা। তার এই বহুল আলোচিত জীবনী নিয়েই রাজ কুমার হিরানীর বায়ো পিক মুভি সাঞ্জু।

সম্প্রতি রিলিজ হওয়া সাঞ্জু একের পর এক রেকর্ড ভেঙ্গে চলেছে। ভাঙ্গাটাই যেন স্বাভাবিক কারণ পরিচালক টাই এমন। মুন্না ভাই, থ্রি ইডিয়ট, পিকের মত মুভি বানিয়েছেন যিনি তার কাছে এসব নতুন কিছুই না।

মুভিটিতে দেখা যায় সঞ্জয় দত্ত, যার উপর বেশ কয়েকটি মামলার রায় পড়ে যাওয়ায় নিজেকে আত্মসমর্পণ করার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু তার আগে তিনি চাচ্ছিলেন যে তার জীবনের চড়াই উতরাই নিয়ে একটি বই লিখা হোক। যেন মানুষ তাকে ভুল না বুঝে সত্যি টা জনাতে পারে। কিন্তু তাকে নিয়ে লেখা প্রথম বইটিতে তাকে মহাত্মা গান্ধীর সাথে তুলনা করা হয় এতে রেগে গিয়ে তিনি বইটি পুড়িয়ে ফেলেন। যার কারণে তিনি অন্য এক লেখিকার কাছে ধরনা দেন। যিনি কিছুতেই রাজি নন তার মত এক "সন্ত্রাসী" ক্ষ্যত কোন লোকের জীবনী লিখে তার নিজের ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে। তবে পুরু কাহিনী জানার পরে তিনিই অবশ্য অধীর আগ্রহে রাজি হয়েছিলেন সঞ্জয় দত্তের জীবনী লেখার জন্য। শুধু রাজি নয় বরং তিনি এমন কিছু জানতে পারলেন যে পরবর্তীতে নিজেই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সত্যি গুলো বের করে নেন।

এখানেই মজাটা।আমরা যারা মুভিটির কথা জানি, তারা এটাও জানি যে মুভিটিতে সঞ্জয় দত্তের জায়গায় অভিনয় করেছেন রণবীর কাপুর। কিন্তু মজাটা এখনেই যে, মুভিটি ফুটে উঠেছে রণবীর কাপুরের জবানীতে নয়, বরং সেই লেখিকার জবানীতে। রণবীর কাপুর শুধু মাত্র সঞ্জয় দত্তের জায়গায় ই অভিনয় করেছেন। অভিনেতা হিসেবে রণবীর কাপুর অবশ্যই অনেক ভালো অভিনেতা। তবে আমার মতে এখানে মনে হয়েছে রণবীর কাপুর ছাড়া অন্য কেউ এই চরিত্রটি এতটা নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন না। মুভিটি দেখার সময় আপনাদের মনে হবে যে আপনারা রণবীর কাপুরকে নয় বরং সঞ্জয় দত্তকেই দেখছেন। এতটাই নিখুঁত আর সূক্ষ্ম ছিল তার অভিনয়।

তবে সবকিছু মিলিয়ে মুভিটি বেশ অসাধারণ ছিল। কারণ মুভিটিতে দেখা যায়, কিভাবে একটা সাধারণ মানুষ নেশার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। আর সে খান থেকে ফিরে আসার পরেও কি ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন। এমনকি আমরা যাদের প্রতিনিয়ত পর্দায় অভিনয় করতে দেখে মনে মনে আফসোস করি, তাদের জীবনটাও আসলে কতটা সাদামাটা এবং ঝামেলা পূর্ণ হতে পারে। মুভিটিতে আরও দেখা যায় যারা মিডিয়ার সাথে জড়িত বা পর্দায় পরিচিত মুখ, একটা নিউজ বা পত্রিকার হেডলাইন কতটা খারাপ প্রভাব ফেলে তাদের জীবনে।

যে সকল কারণে মুভিটি সমালোচিত বা আপনার খারাপ লাগতে পারে:


১। মুভিটিতে সঞ্জয় দত্তকে পুরোপুরিভাবে নির্দোষ এবং ক্লিন চরিত্রের ব্যক্তিত্ব হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

২। অনেকের মতে সঞ্জয় দত্তের মার্কেট ভ্যালু বাড়ানোর জন্যেই রাজ কুমার হীরানী তার বায়ো পিকটি রিলিজ করেছেন, কারণ মুন্না ভাই সিরিজের ৩য় মুভিটি খুব তাড়াতাড়ি তিনি করতে যাচ্ছেন। কারণ এই সিরিজের আগের ২ টি মুভিও তারই করা।

৩। ড্রাগের প্রতি আসক্তির মূল কারণ হিসেবে তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং সম্পূর্ণ দোষটি তার বন্ধুর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

৪। তার ফ্যামিলির নিরাপত্তার কারণেই নাকি আন্ডার ওয়ার্ল্ডের সাথে তার সম্পর্কের কারণ । এখানেও যথারীতি তাকে নির্দোষ হিসেবেই দেখানো হয়েছে যদিও আন্ডার ওয়ার্ল্ডের সাথে তার সম্পর্কের যথেষ্ট প্রমাণ পুলিশের কাছেই ছিল।

৫। অস্ত্র মামলায় তাঁর কাছে এ কে ৫৬ বন্দুক রাখার তিনি নিজেই স্বীকার করে এক ইন্টার্ভিউতে বলেছিলেন যে তাঁর শিকার করার শখ ছিল, কিন্তু মুভিতে এই জিনিসটি সূক্ষ্ম ভাবে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

যে কারণে মুভিটি আপনার ভালো লাগতে পারে:

১। একজন অভিনেতা বা হাই প্রোফাইল মানুষ কিভাবে ড্রাগের দিকে আসক্ত হয়ে যেতে পারে এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে ফিরে আসা এবং আসার পরেও কী ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয় তার সবই ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক নিপুণ ভাবে।

২। পারিবারিক চাপ এবং নিজের ক্যারিয়ার পাশা পাশী পারিপার্শ্বিক অবস্থা কিভাবে একজন মানুষ কে ভুগাতে পারে সেই জিনিসটিও খুব সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে।

৩। মিডিয়ার একটি নিউজ বা একটি হেডলাইন একটা মানুষের জীবনে কতটা মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে সেই জিনিটিও খুব সহজে উপলব্ধি করতে পারবেন।

৪। বাবার সাথে ছেলের সম্পর্কের যে দূরত্ব এবং তা কাটিয়ে উঠে পিতৃ সুলভ যে সাপোর্ট দেয়া উচিত সে জিনিটিও চমৎকার লেগেছে।

৫। একটি কাল্পনিক চরিত্র যতটা ভালো ভাবে নিজের মত করে ফুটিয়ে তোলা যায় বায়ো পিকে সঞ্জয় দত্তের মত গম্ভীর ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ণ একটি চরিত্র হুবহু নকল করা বেশ জটিল ও কষ্ট সাধ্য ছিল যেটির জন্য রণবীর কাপুর অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।

বায়োপিক মুভি কিছুটা বোরিং ধরণের হলেও রাজ কুমার হিরানী বেশ চমৎকার ভাবে মুভিটির শেষ পর্যন্ত উত্তেজনা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছেন। আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে।

IMDB অনুসারে রেটিং - ৮.৯
ব্যক্তিগত রেটিং- ৯/ ১০
মুভিঃ স্টোনম্যান মার্ডার্স । The Stone Man Murders

মুভিঃ স্টোনম্যান মার্ডার্স । The Stone Man Murders

ব্যাক্তিগত রেটিং ৮/১০


[সত্য ঘটনা] সাল ৮০র দশক । ভারতে প্রথম বারের মত আবির্ভাব ঘটল এমন এক সিরিয়াল কিলারের যে কিনা ফুটপাতের অসহায় মানুষদের খুন করা শুরু করল একে একে । ১৯৮৩ সালে বোম্বের রাস্তাঘাটে, ফুটপাতে একে একে পাওয়া গেল ৯টি লাশ। যাদের মাথা থেতলে দেওয়া হয় ভারি পাথর দিয়ে । রাত জেগে পুলিশ পাহারাও খুব একটা কাজে দিল না। পাওয়া গেল না কোন খুনী কিংবা খুনের কোন মোটিভ । পুলিশ নাম দিয়ে দিল “পাথরমানব হত্যাকারী” আর পুরো জিনিসটিই থেকে গেল অমীমাংসিত।

প্রায় ৪ বছর বিরতি দয়ে ১৯৮৭ আবার শুরু হলো একই ভাবে খুন! তবে এবার স্থান কলকাতায় আর খুন হলোও ৯টি। যথারিতি কোন প্রমাণাদি ছাড়া আমিমাংসিত কেস যার কোন সমাধান তখনো হয়নি। 

উইকিপিডিয়া অনুযায়ী তার মোট টার্গেট ছিল ১৩-২৬ জন!!! সাল এবং সময় নিয়ে কিছুটা দ্বিমত রয়েছে!

জি, এতক্ষণ কোন মুভির কথা বলছিলাম নাহ! বলছিলাম সত্যি ঘটনা, যার উপর ভিত্তি করে ২০০৯ সালে বানানো হয় The Stoneman Murders। উপরের কাহিনী শুনে আশা করি বুঝে গেছেন কি ধরনের মুভি। যার মূল চরত্রে ছিল Kay Kay Menon আর Arbaaz Khan যাদের অভিনয় নিয়ে নুতুন করে কিছু না বললেও চলে। যাই হোক, মুভির কাহিনীতে দেখা যায় Sanjay Shelar (KayKay Menon) বদরাগী সাব ইন্সপেক্টরের ভূমিকায়। যার কিঞ্চিত আসামী ধরে ডলা দেওয়ার  বদ-অভ্যাস ছিল। যার কারনে শুরুতেই তার চাকরি চলে যায় তাই খুন গুলোর তদন্ত করতে হয় আন অফিসিয়ালি। 

Sanjay এর ই আরেক সহকারী পুলিশ Kedar (Arbaaz Khan) যে অফিশিয়াল ভাবে তদন্তরত অবস্থায় সন্দেহ করে বসে Sanjay কে । কারণ খুনের সময় এবং কাছাকাছি তাকে আশেপাশেই পাওয়া যেত। আর যেহেতু মারধর করার রেকর্ডও ছিল তার এবং চাকরি চলে যাওয়ায় হয়ত সেই খুন শুরু করে রক্তপিপাসু নেশায়! এমন সন্দেও শুরু হলো তার উপর!

সত্যিকার ঘটনায় খুনিকে ধরা না গেলেও মুভিতে শেষ পর্যন্ত Sanjay রহস্যের সমাধান করতে পেরেছিল। খুবই কম লোক জানতে পেরেছিল তার সমাধানের কথা । কিন্তু এত কাঠ খড় পোড়ানোর পরেও Sanjay তার চাকরীটি ফিরে পেল নাহ। এমনকি কাহিনীর শেষ দৃশ্যে দেখা যায়, মিডিয়াতে প্রকাশিত হয় “Case was never solved!”

কারণ কেউই এর সত্যটা জানতে দিতে চায় না! এটাও একটি রহস্য তবে এর উত্তর জানতে আপানাকে মুভিটি অবশ্যই দেখতে হবে!

বিঃদ্রঃ বাস্তব কাহিনীতে খুনীকে ধরা না গেলেও মুভিতে রহস্যের সমাধান দেখানো হয়েছে। কারণ মুভিতে অনেকটাই বাস্তব কাহিনীর ব্যাখা দেওয়া হয়েছে। হয়ত এ কারনেই মিডিয়ার কাছে কেইসটি ইচ্ছা করে অমীমাংসিত রাখা হয়েছে!!!
মুভি রিভিউঃ রহস্য  (Rahasya)

মুভি_রিভিউ- রহস্য ২০১৫ ( #Rahasya )


শুরুতেই খুন! যে মুভির নামই “রহস্য” আশ্চর্যের কিছু নেই! এক ডক্তার দম্পতির ১৮ বছর তরুণী তাদের নিজস্য ঘরেই রহস্যময় ভাবে খুন হল। খুঁজে পেল বাবার সহকারী নার্স। যথারীতি পুলিশী কেইস আর সেই সাথে তাদের চাকর হওয়া! কিন্তু নাহ! তদন্তে বের হলো মাতাল বাবার সাথে কিছুটা মারামারিও হয়েছিল সেই রাতে! তাই কিছু প্রমাণ হাতে পেয়ে বাবাকেই আসামী করে দিল পুলিশ!

কিন্তু এ কেমন বিচার ! মাতাল হলেও বাবা কেন শত আদরের মেয়েকে খুন করতে যাবে? তাই ন্যায় বিচারের জন্য মা গেল CBI অফিসার Sunil Paraskar (KayKay Menon) এর কাছে! যথারীতি মুভির নায়ক আর রহস্য উৎঘাটক । 
যাকে বেশ কয়েকটি মুভিতে বদরাগী পুলিশ হিসেবে দেখা গেলেও এখানে বেশ খোশমেজাজী আর মিডেল ক্লাস সৎ অফিসার হিসেবে দেখা যায়! যিনি কেইস হাতে পেয়েই বলে দিলেন না কোন মাতাল ব্যাক্তি এ খুন করতে পারেনা! শুরু হলো CBI এর তদন্ত। সেই সাথে হয়ে গেল আরো দুটি খুন, সাথে তার উপর ও হামলা! কিন্তু এ কেমন রহস্য যার উপর খুনের দায় তার লাশ কিনা পাওয়া গেল সে বাড়ীর মেঝেতে!

শুরুতেই খুব সাধারণ থ্রিলার মুভি মনে হলেও আস্তে আস্তে ঘনীভূত হতে থাকল রহস্যের জাল এবং খুলতে শুরু করলো জট । আসলেই কি তাই? নাকি নিজেই জড়িয়ে গেল অন্য এক রহস্যের জালে! বের হয়ে এল নানা বিচিত্র চাঞ্চল্যকর তথ্য! একে একে খুন হলো সন্দেহকারীরাও! অবশেষে নাটকীয় সমাধান! যার রহস্যভেদ করতে হলে আপনাকেও দেখে নিতে হবে পুরো মুভিটি!

২ ঘন্টা ৩ মিনিটের মুভিটিতে কোন প্রকার গান বা রোমান্সের দৃশ্য এমনকি নাচ গান ও নেই, যার কারণে ১৮+ দর্শকদের হতাশ করলেও থ্রিলার প্রেমীদেরকে ১ সেকেন্ডের জন্যেও মুভিটি ছেড়ে উঠতে দিবে নাহ। 

IMDb অনুসারে মুভির রেটিং ৭.৭



ব্যক্তিগত রেটিং ৮/১০ ।  
মুভি রিভিউঃ বাইশে শ্রাবণ



[স্পয়লার এলার্ট / ক্রিটিকাল রিভিউ]




ব্যাক্তিগত ভাবে আমি সিরিয়াল কিলার থ্রিলার লাভার। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মুভিটাকে কেন যেন ইচ্ছে করেই ফেলে রেখেছিলাম। দেখব দেখব করেও দেখা হয়নি। আজ দেখে ফেললাল পুরোটাই। পুরো গল্পটা বেশ ভালোই চলছিল সাসপেন্স আর উত্তেজনায়। বরং শেষ দিকটাই কিছুটা ধীর গতির মনে হয়েছে। 

কাহিনী সংক্ষেপ

গল্পের পুরোটা জুড়ে প্রবির (প্রসেনজিৎ) আর আভিজিৎ প্রকাশ (পরমব্রত) মিলে সিরিয়াল কিলিং কেইস গুলো সমাধান করার চেষ্টা করতে থাকে। শেষ মেষ খুনী টাকে পেয়ে গেলেও কাহিনি মোড় নেয় উলটা দিকে। এট্টুক পর্যন্ত ঠিকই ছিল কিন্তু এই খানে এসে কিছুটা খটকা লাগে। বিশেষ করে প্রসেঞ্জিত যখন বলল "কাঁচা হাতের স্ক্রিপ্ট সব সোজা সোজা মিলে গেল"। আমার মনে হয় কাহিনীটা এট্টুকই ছিল, পরে সাসপেন্স বাড়ানোর জন্য শেষের টুকু টেনে নেওয়া। [দেখা শেষ করে এসে জানাতে পারেন, আপনার কি মনে হয়েছিল] 😁

তবে যাই হোক সিরিয়াল কিলার হিসেবে গোতম ঘোষ চমৎকার পাগলামির অভিনয় করতে পেরেছিল। তার এই চরিত্রটি যথাযথ সার্থক। কিন্তু প্রসেনজিৎ এর শেষের দিকের অভিনয়টা বেশ খাপ ছাড়া লেগেছিল। কবিতা, পুলিশ অফিসার আর পাগলামি ঠিক যেন ফুটে উঠেনি। তার মত অভিনেতার উপর দর্শকদের প্রত্যাশা বেশিই থাকে। বিশেষ করে অটোগ্রাফ এর পর তার অভিনয় দেখার জন্য একটু নড়েচড়ে বসতে হয়।  

পার্শ্ব চরিত্রে আবির পুরাই ইউজলেস ছিল। মনে হচ্ছিল দরকারের বেশি ফোকাস করে ফেলেছে তার উপর।

IMDB অনুসারে রেটিং – ৮.১
ব্যক্তিগত রেটিং- ৭.৫


বিঃ দ্রঃ পুরোটাই ব্যক্তিগত মতামত, না মিললে এড়িয়ে চলুন ☺️
সুলি:মিরাকল অন দ্যা হাডসন | Sully: Miracle on the Hudson


Sully: Miracle on the Hudson




ঘটনা অনেকটা ত্রিভুবন বিমান বন্দরে ঘটে যাওয়া ইউ এস বাংলা বিমান দূর্ঘটনার মত। যাত্রীবাহী বিমান মাঝ পথে দুর্ঘটনার শিকার। তবে মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনায় ৫১ জন মারা গেলেও SULLY মুভিটিতে মারা যায়নি কেউ।


বলছিলাম Tom Hanks অভিনীত দারুণ একটি সিনেমা “সুলী” এর কথা। যেখানে Chesley "Sully" Sullenberger নামক এক বাস্তব চরিত্রে অভিনয় করেন টম হ্যাংকস যিনি একজন দক্ষ পাইলট আর তার সহকারী Jeff Skiles (Aaron Eckhart ) ইউ এস এয়ারওয়েজ ফ্লাইট ১৫৪৯ নামে একটি যাত্রী বিমান নিয়ে মাঝ পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কিন্তু অসম্ভব কাকতালীয় ভাবে বেঁচে যায় বিমানের সবকটি যাত্রী। কিন্তু প্রশ্ন বিদ্ধ হয়ে পড়ে তার ৪২ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ক্যারিয়ার। মিডিয়া আর খবরের কল্যাণে জন সাধারণের কাছে হয়ে উঠেন একজন অতিমানব হিসেবে। কিন্তু না বাধ সাধল জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড। দাবি করে বসল যে বিমানটি নিরাপদ ভাবেই এয়ার পোর্টে ফিরে আসতে পারত। 

কিন্তু তা না করে ক্যাপ্টেনের নির্বুদ্ধিতার কারণেই মূলতঃ বিমানটি ঝুঁকি পূর্ণ ভাবে অবতরণ করে। আর এর প্রমাণ হিসেবে তারা আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে সিমুলেশন ঘটিয়ে দেখিয়ে দিল যে দুর্ঘটনা পড়া সত্ত্বেও আরও নিরাপদ ভাবে বিমানটি অবতরণ করতে পারত। একদিকে সাধারণের চোখে অসাধারণ হয়ে উঠা অন্যদিকে তার দিকে আঙুল তোলায় ক্যাপ্টেন সুলি নিজেই নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হওন। আসলেই কি তার ভুল হয়ে ছিল কিছু সত্যিই কি আরও ভালো কোন উপায় ছিল কি ?

আদালতের শুনানিতেই সবাই জানতে পারলো বিমানটি এয়ার পোর্টে নিরাপদে ফিরে আসতে পারত তবে তার জন্য দরকার পড়ত ১৭ বার ব্যর্থ প্রচেষ্টা! সমস্ত রিপোর্ট আর বিশেষজ্ঞদের মতে যেটি কাকতালীয় ভাবে নয় কেবল ক্যাপ্টেন সুলির পক্ষেই সম্ভব ছিল!

২০০৯ সালের ১৫ ই জানুয়ারি ঘটে যাওয়া সেই সত্যিকারের দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ১৫৫ জন যাত্রী প্রতি বছর তাদের বেঁচে যাওয়াটা এক সাথে উপভোগ করেন। তাদের সেই আনন্দঘন উদযাপন টাই পরিচালক Clint Eastwood কে সিনেমাটি বানাতে উৎসাহিত করেন। যেটি মূলত Chesley Sullenberger and Jeffrey Zaslow এর লেখা Highest Duty: My Search for What Really Matters নামক নিজদের আত্মজীবনী এর উপর ভিত্তি করে রচিত।

জীবনী বা নাটক ধরণের মুভিটিতে তেমন কোন রহস্য নেই। তবে প্রতিটি দৃশ্যপট এমন ভাবে সাজানো আর এতই উত্তেজনা সৃষ্টি করে সেটাই সিনেমাটির সোন্দোর্যপূর্ণ রহস্য। ৯৬ মিনিটের ব্যবসায় সফল সিনেমাটির বাজেট ছিল ৬ কোটি টাকার সম পরিমান ডলার আর বক্স অফিস থেকে আয় করে নেয় ২৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকার সম পরিমাণ ডলার।

আপনি যদি সত্যি সিনেমা প্রেমী আর টম হ্যাংকস এর ভক্ত হয়ে থাকেন তবে সময় করে দেখে ফেলতে পারেন দারুণ এই সিনেমাটি।

IMDB অনুসারে রেটিং – ৭.৫
ব্যক্তিগত রেটিং- ৮
পচা টমেটো – ৮৬%
x