বাংলা সিনেমা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বাংলা সিনেমা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
পরিণীতা- ভালবাসা এবং প্রতিশোধ

Parineeta Movie Review by imtiazshoykat.blogspot.com

পরিণীতা- ভালবাসা এবং প্রতিশোধ


আমি বরাবরই ভাল ভাল মুভি গুলো সবার শেষে দেখি। কেননা যখনই যেটার হাইপ উঠে সেটা নিয়ে লাগাতার পোস্ট চলতেই থাকে।

যেটা ভাল সেটা ভাল বলতে বলতে ফেনা তুলে ফেলে। আর একবার পচানি খাইলে সেটার তো কথাই নাই। ফেসবুকে মুভি গ্রুপ গুলাতে সেটা কচলানো লেবুর মত তিতা হয়ে ঝুলতে থাকে। 



সেই অভ্যাস বসত গত বছরের পরিণীতা মুভিটি সার্ভারে আপলোড করা হয়েছি দেখেছি কিন্তু দেখার আগ্রহ বোধ করিনি।



ফ্রেন্ড লিস্টের দু একজন জোর ও করেছিল দেখার কিন্তু ঠিক ঠাক মুডটা পাচ্ছিলাম না। অই দুই তিনবার ট্রেইলার দেখেই ক্ষ্যান্ত দিয়েছি।

কিন্তু শেষ মেশ হুট করেই দেখতে বসে গেলাম। আর দেখার পর ভাল লাগাটা নিয়ে মুভি শেষ করেই রিভিউ লিখতে বসে গেলাম। 


পরিণীতা মুভিতে যা দেখবেন

দুরন্তপনা কিশোরী বয়স আর বাড়ির পাশে ক্রাশ খাওয়া হুম টিউটার থাকলে যা হয় অই আরকি। এই নিয়েই ছিমছাম গল্পের পরিণীতা মুভিটি।


তবে মুভিটি ঠিক প্রেম কাহিনী নিয়ে নয়। এর ভেতরের মজাটা পাবনে মুভির একদম শেষের টুইস্টে। মুভির ঠিক মাঝ বরাবর আসতেই নায়ক "বাবাই দা" বলা নেই কওয়া নেই গলায় দড়ি লাগিয়ে ঝুলে পড়লো। মানে সুইসাইড আরকি।


তবে আমি যতটা সহজ ভাবে বলে ফেললাম সুইসাইড এর পেছনের কারণটাও কিন্তু এতটা সহজ ছিল না।


বাবাই-দা কে হারিয়ে কিশোরী মেহুল যেন এক লাফে অনেক বড় হয়ে যায়। এক দিকে সংসার অন্যদিকে হারানো প্রেমের শোক। অবশেষে সংসারের ঘানী টানতে মেহুলকে পা বাড়াতে হয় কর্পোরেট জগতের গ্লামারাস লাইফে। সেখানে ক্যারিয়ার সামনে এগিয়ে নিতে হলে বসের ছোঁয়া লাগেই। এখানেই বেড়া ছেড়া লাগিয়ে দেয় মেহুল। 


তবে কি মেহুল বাবাই-দার কথা একদমই ভুলে যাবে? তবে কি এই প্রেম মিথ্যে ছিল? আর বাবাই-দা-ই বা কেন শুধু শুধু আত্মহত্যা করে বসলো মুভির ঠিক মাঝ বরাবর?   


ছিম ছাম গল্পের এই সুইসাইডের রহস্যটা মুভির ঠিক শেষে বেরিয়ে আসবে। আর তখনি আলি বাবার চিচিং ফাঁক ( যা ভাবছেন তা নয় ) এর মত সব জল পানি হয়ে যাবে আপনার কাছে!  


তার জন্যে পুরো এক ঢোকে মুভিটি গিলে ফেলত হবে আপনাকে। ভুলেও কিন্তু উঠা যাবে না মুভি পজ করে। সেই সাথে প্রতিটি দৃশ্যে মেহুলের পাগলামিটা অবশ্যই উপভোগ করবেন আপনি। 


কেন দেখবেন পরিণীতা মুভিটি? 

একটা কলেজ পড়ুয়া দুরন্তপনার কিশোরী মেয়ের ঠিক যতটুকু দুষ্টুমি আর ছন্ন ছাড়া হওয়া উচিত শুভ শ্রী যেন ঠিক ততটাই ছিল মুভিতে। মুভিটি দেখা শেষে আপনি একপ্রকার বাধ্যই হবেন এটা মানতে যে শুভ শ্রীর এটা একটা বেস্ট মুভি ছিল। চরিত্রের সাথে এর আগে এতটা মিশে যেতে খুব একটা চোখে পড়ে নি তাকে। 

Image Source: Indulge Express


আর ঋত্বিক চক্রবর্তী ব্যাপারে কিছু বলার নেই। এই লোকটার প্যাশনেট অভিনয় যে কাউকেই মুগ্ধ করতে বাধ্য। তার কাজই তাকে চেনাতে বাধ্য করেছে। কিছুদিন আগে দেখা তার অভিনীত ভিঞ্চি দা সিনেমাতে তার ভিলেন চরিত্র ভুলার মত নয়। এছাড়াও তার কাজ করা প্রতিটি সিনেমাতে তার চরিত্র গুলো বেশ প্রশংসার দাবিদার। ২০১৩ সালে অপুর পাঁচালী সহ ব্যোমকেশ পর্ব এবং হর হর ব্যোমকেশেও অভিনয় করেছিলেন তিনি। 

Image Source: zee5



এছাড়াও মুভিটিতে রয়েছে মোট ৭ টি গান। যার মধ্যে শ্রেয়া ঘোষালের তোমাকে এবং অর্কের সেই তুমি গান দুটি এই মুভি হেটার্সদেরও ভাল লাগবে। 



যাইহোক, ঘরে বসে থেকে আর এই রিভিউ পড়ে দু একবার ভেবে চিন্তে সময় নষ্ট করার আগেই দেখে ফেলতে পারেন মুভিটি। একবার মেহুল চরিত্রে ডুব দিতে পারলে পুরো মুভির ১ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট খুব একটা খারাপ কাটবে না। 


২০১৯ সালে মুক্তি প্রাপ্ত রোমান্টিক ধাঁচের মুভিটি পরিচালনা করেন রাজ চক্রবর্তী। আর পরিণীতার গল্পটি লিখেছেন অর্ণব ভৌমিক। তার আরও একটি ক্রাইম থ্রিলার “প্রতিদ্বন্দ্বী”আসছে ২০২১ সালে।  


IMDB অনুসারে মুভির রেটিং ৭.৩।  ব্যক্তিগত পছন্দ অনুসারে ৭.৫ বা আরেকটু  আবেগ বসে ৮ দিয়ে দেওয়া যায়। তবে যারা দেখে ফেলেছেন তারা ব্যক্তিগত রেটিং জানাতে পারেন। 




Image Source: zee5
মুভি রিভিউঃ রহস্য  (Rahasya)

মুভি_রিভিউ- রহস্য ২০১৫ ( #Rahasya )


শুরুতেই খুন! যে মুভির নামই “রহস্য” আশ্চর্যের কিছু নেই! এক ডক্তার দম্পতির ১৮ বছর তরুণী তাদের নিজস্য ঘরেই রহস্যময় ভাবে খুন হল। খুঁজে পেল বাবার সহকারী নার্স। যথারীতি পুলিশী কেইস আর সেই সাথে তাদের চাকর হওয়া! কিন্তু নাহ! তদন্তে বের হলো মাতাল বাবার সাথে কিছুটা মারামারিও হয়েছিল সেই রাতে! তাই কিছু প্রমাণ হাতে পেয়ে বাবাকেই আসামী করে দিল পুলিশ!

কিন্তু এ কেমন বিচার ! মাতাল হলেও বাবা কেন শত আদরের মেয়েকে খুন করতে যাবে? তাই ন্যায় বিচারের জন্য মা গেল CBI অফিসার Sunil Paraskar (KayKay Menon) এর কাছে! যথারীতি মুভির নায়ক আর রহস্য উৎঘাটক । 
যাকে বেশ কয়েকটি মুভিতে বদরাগী পুলিশ হিসেবে দেখা গেলেও এখানে বেশ খোশমেজাজী আর মিডেল ক্লাস সৎ অফিসার হিসেবে দেখা যায়! যিনি কেইস হাতে পেয়েই বলে দিলেন না কোন মাতাল ব্যাক্তি এ খুন করতে পারেনা! শুরু হলো CBI এর তদন্ত। সেই সাথে হয়ে গেল আরো দুটি খুন, সাথে তার উপর ও হামলা! কিন্তু এ কেমন রহস্য যার উপর খুনের দায় তার লাশ কিনা পাওয়া গেল সে বাড়ীর মেঝেতে!

শুরুতেই খুব সাধারণ থ্রিলার মুভি মনে হলেও আস্তে আস্তে ঘনীভূত হতে থাকল রহস্যের জাল এবং খুলতে শুরু করলো জট । আসলেই কি তাই? নাকি নিজেই জড়িয়ে গেল অন্য এক রহস্যের জালে! বের হয়ে এল নানা বিচিত্র চাঞ্চল্যকর তথ্য! একে একে খুন হলো সন্দেহকারীরাও! অবশেষে নাটকীয় সমাধান! যার রহস্যভেদ করতে হলে আপনাকেও দেখে নিতে হবে পুরো মুভিটি!

২ ঘন্টা ৩ মিনিটের মুভিটিতে কোন প্রকার গান বা রোমান্সের দৃশ্য এমনকি নাচ গান ও নেই, যার কারণে ১৮+ দর্শকদের হতাশ করলেও থ্রিলার প্রেমীদেরকে ১ সেকেন্ডের জন্যেও মুভিটি ছেড়ে উঠতে দিবে নাহ। 

IMDb অনুসারে মুভির রেটিং ৭.৭



ব্যক্তিগত রেটিং ৮/১০ ।  
মুভি রিভিউঃ বাইশে শ্রাবণ



[স্পয়লার এলার্ট / ক্রিটিকাল রিভিউ]




ব্যাক্তিগত ভাবে আমি সিরিয়াল কিলার থ্রিলার লাভার। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মুভিটাকে কেন যেন ইচ্ছে করেই ফেলে রেখেছিলাম। দেখব দেখব করেও দেখা হয়নি। আজ দেখে ফেললাল পুরোটাই। পুরো গল্পটা বেশ ভালোই চলছিল সাসপেন্স আর উত্তেজনায়। বরং শেষ দিকটাই কিছুটা ধীর গতির মনে হয়েছে। 

কাহিনী সংক্ষেপ

গল্পের পুরোটা জুড়ে প্রবির (প্রসেনজিৎ) আর আভিজিৎ প্রকাশ (পরমব্রত) মিলে সিরিয়াল কিলিং কেইস গুলো সমাধান করার চেষ্টা করতে থাকে। শেষ মেষ খুনী টাকে পেয়ে গেলেও কাহিনি মোড় নেয় উলটা দিকে। এট্টুক পর্যন্ত ঠিকই ছিল কিন্তু এই খানে এসে কিছুটা খটকা লাগে। বিশেষ করে প্রসেঞ্জিত যখন বলল "কাঁচা হাতের স্ক্রিপ্ট সব সোজা সোজা মিলে গেল"। আমার মনে হয় কাহিনীটা এট্টুকই ছিল, পরে সাসপেন্স বাড়ানোর জন্য শেষের টুকু টেনে নেওয়া। [দেখা শেষ করে এসে জানাতে পারেন, আপনার কি মনে হয়েছিল] 😁

তবে যাই হোক সিরিয়াল কিলার হিসেবে গোতম ঘোষ চমৎকার পাগলামির অভিনয় করতে পেরেছিল। তার এই চরিত্রটি যথাযথ সার্থক। কিন্তু প্রসেনজিৎ এর শেষের দিকের অভিনয়টা বেশ খাপ ছাড়া লেগেছিল। কবিতা, পুলিশ অফিসার আর পাগলামি ঠিক যেন ফুটে উঠেনি। তার মত অভিনেতার উপর দর্শকদের প্রত্যাশা বেশিই থাকে। বিশেষ করে অটোগ্রাফ এর পর তার অভিনয় দেখার জন্য একটু নড়েচড়ে বসতে হয়।  

পার্শ্ব চরিত্রে আবির পুরাই ইউজলেস ছিল। মনে হচ্ছিল দরকারের বেশি ফোকাস করে ফেলেছে তার উপর।

IMDB অনুসারে রেটিং – ৮.১
ব্যক্তিগত রেটিং- ৭.৫


বিঃ দ্রঃ পুরোটাই ব্যক্তিগত মতামত, না মিললে এড়িয়ে চলুন ☺️